পরীক্ষার আগে নোট পড়ে নেওয়া খুবই উপকারী। এটি শুধুমাত্র তথ্য পুনরাবৃত্তি করতে সাহায্য করে না, বরং নোট করার সময় দলগত আলোচনার মাধ্যমে জটিল বিষয়গুলো সহজে বোঝা যায়। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোট খুবই সহায়ক। নোট তৈরি করার পর তা সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নোট তৈরী করার নিয়ম বা কৌশল কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুসরণ করে করলে তা আরও কার্যকরী ও স্মরণযোগ্য হয়। এখানে কিছু মূল পদক্ষেপ উল্লেখ করছি ।
১. প্রথমে মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন
নোট তৈরী করার সময় মূল পয়েন্টগুলো খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব তথ্য লিখে ফেলা নয়, শুধু প্রধান বিষয়গুলো ও মূল ধারণাগুলো লিখুন।
যেমন: কী? কেন? কিভাবে? এই প্রশ্নগুলো করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করে নোটে লিখুন।
২. সংক্ষেপে লিখুন
বড় বড় বাক্য না লিখে, সংক্ষিপ্ত, পয়েন্ট আকারে তথ্য লেখার চেষ্টা করুন। এতে পাঠ করার সময় সুবিধা হবে।
উদাহরণ: "বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান ঘটনাগুলো"—এর বদলে "স্বাধীনতা সংগ্রাম: ৭১, মুজিবনগর, মুক্তিযুদ্ধ"।
৩. বুলেট পয়েন্ট বা নম্বরিং ব্যবহার করুন
তথ্যগুলোকে সুস্পষ্টভাবে সাজাতে বুলেট পয়েন্ট বা নম্বরিং ব্যবহার করুন। এতে পাঠ করার সময় সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।
উদাহরণ:
মুক্তিযুদ্ধের সূচনা
৭ মার্চের ভাষণ
পাক বাহিনীর আক্রমণ
৪. ভিজ্যুয়াল উপকরণ ব্যবহার করুন
ডায়াগ্রাম, চার্ট, টেবিল, ছবির মাধ্যমে নোটের বিষয়গুলো চিত্রিত করা যেতে পারে। এটি মনোযোগ আকর্ষণ এবং স্মৃতিতে রাখতে সহায়ক হয়।
উদাহরণ: ইতিহাসের কোন ঘটনা বা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বোঝাতে চিত্রের সাহায্য নিন।
৫. রঙ বা হাইলাইটার ব্যবহার করুন
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা শব্দগুলো হাইলাইট বা আলাদা রঙে লেখার মাধ্যমে সেগুলোকে সহজে মনে রাখতে সহায়ক হবে।
যেমন, প্রধান বিষয়গুলোর জন্য লাল বা নীল রঙ ব্যবহার করা।
৬. মাথার উপরে শিরোনাম বা টপিক লিখুন
প্রতিটি নোটের উপরে সংশ্লিষ্ট টপিকের নাম বা শিরোনাম লিখুন, যাতে পরে পড়তে গিয়ে সহজে বুঝতে পারেন কোন বিষয়টি কী ছিল।
উদাহরণ: "সামাজিক বিজ্ঞানের মূল ধারণা" বা "ভৌত বিজ্ঞান: তাপগতিবিদ্যা"
৭. কানেকশনের দিকে মনোযোগ দিন
একই বিষয়ে একাধিক তথ্য বা ধারণা একত্রিত করার চেষ্টা করুন। এতে আপনি বিষয়টির প্রতি সম্যক ধারণা পাবেন।
উদাহরণ: কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে অন্য ঘটনা ঘটেছে—এভাবে সংযোগগুলো খুঁজে বের করুন।
৮. প্রশ্ন তৈরি করুন
পড়ার সময় বা নোট তৈরীর পর, নিজে প্রশ্ন তৈরি করুন এবং সেগুলোর উত্তর লিখে রাখুন। এটা আপনার মেমোরি শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
উদাহরণ: “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান কারণ কী ছিল?”
৯. পুনরায় পর্যালোচনা করুন
নোট তৈরী করার পর, একবার পড়ুন ও পর্যালোচনা করুন। কিছু বিষয় বাদ পড়লে বা অন্যভাবে লেখা প্রয়োজন মনে হলে তা সংশোধন করুন।
১০. সময়মত নোট নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
নিয়মিত নোট নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আপনার পড়াশোনার প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ এবং দ্রুততর করবে।
এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে আপনি নোট তৈরী করতে পারবেন যেগুলো পড়াশোনার জন্য আরও কার্যকরী হবে।
Comments
Post a Comment